Looking For Anything Specific?

ads header

প্রাক্তন - সংগ্রহীত | Praktan - Bangla Golpo | latest Bangla Sad Story

প্রাক্তন - সংগ্রহীত | Praktan - Bangla Golpo | latest Bangla Sad Story

bangla premer golpo pdf, bangla premer golpo love story, bangla premer golpo pdf free download, bangla premer golpo video, bangla premer golpo photo, bangla premer golpo facebook, bangla premer golpo pdf download, bangla premer golpo book pdf, bangla premer golpo mp3 download, romantic bangla premer golpo, best bangla premer golpo, new bangla premer golpo, bangla romantic premer golpo pdf, bangla romantic premer golpo mp3, bangla film premer golpo, bangla short premer golpo, bangla sad premer golpo, bangla bertho premer golpo, bangla koster premer golpo,


#প্রাক্তন#

 দীর্ঘ সাত বছর পর একটা মোড়ে দুই প্রাক্তনের হঠাৎ দেখা;

- আমাকে দেখে অবাক হওনি ?

সৌরভ স্বাভাবিক ভঙ্গিতে মুচকি হেসে উত্তর দেয়,

- হয়েছি তবে তোমাকে দেখে নয়, তোমার লম্বা চুলগুলোকে দেখে। 

রুমকি হয়তো খানিকটা ইতস্ততবোধ করে বলে,

- আসলে ওর লম্বা চুলই পছন্দ। তাই এখন আর আগের মত তিনমাস অন্তর অন্তর নতুন নতুন হেয়ার কাট করি না৷

- আচ্ছা ভালো তো। তারপর বলো কেমন আছো  ?

- যেরকম থাকার কথা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি, সেরকম আছি। 

রুমকি একটু থেমে আবার বলতে শুরু করে,

- বাবার কথামতো বিয়েতে রাজি হয়ে যাওয়ার পর মনে মনে ভীষণ ভয় পাচ্ছিলাম। মনে হচ্ছিলো আমি সুখী হতে পারবো না। তোমাকে ছাড়া ভালো থাকতে পারবো না। কিন্তু বিয়ের পর আর এক মূহুর্তের জন্যেও এমন ভয় বা শঙ্কা কাজ করেনি কখনো। কপালগুণে অসম্ভব ভালো একজন মানুষ পেয়েছি আমি। তার কথা বলতে গেলে সময় ফুরিয়ে যাবে কিন্তু কথা ফুরাবে না, বুঝলে ?

শেষ কথাটা বলতে গিয়ে রুমকির ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি ফুটে ওঠে। সৌরভ স্থির দৃষ্টি নিয়ে সেই হাসির দিকে তাকিয়ে থাকে।

- কি হল? এভাবে কি দেখছো ?

- দেখছি তোমার সরলতাকে। এমন করে অবলীলায় কেউ তার প্রাক্তনের সামনে নিজের হাজবেন্ড এর গুণগান করতে পারে বলে জানা ছিল না। 

- ওমা! এ আবার কেমন কথা! যা সত্যি তা বলবো না ? এটা কি কোনো নাটক সিনেমা নাকি যে প্রাক্তনের সামনে সবসময় দুঃখী দুঃখী চেহারা নিয়ে উদাসী হয়ে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে!

- তা অবশ্য ঠিক বলেছো। 

- তুমি কেমন আছো ?

- যেমনটা আশা করেছিলাম তেমনই আছি। 

সৌরভও একটু থেমে আবার বলতে শুরু করে,

- তুমি চলে যাওয়ার পর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম একজন সঠিক মানুষের জন্য। যে আমাকে তোমার দেওয়া দুঃখগুলো ভুলিয়ে দেবে। আমার সকল দূর্বলতাকে মেনে নিয়ে শক্ত হাতে আমাকে সামলে নেবে। আর আমাকে তোমার থেকেও অনেক অনেক বেশি ভালোবাসবে। ভাগ্যগুণে পেয়েও গেলাম সেই সঠিক মানুষটাকে। হ্যাঁ, সে খানিকটা দেরি করেই আমার জীবনে এসেছে কিন্তু তবুও এসেছে তো! অনেকে তো  সময়ের আগে চলে এসে আবার সময়ের আগেই চলে যায়। 

শেষ কথাটা যে রুমকিকে উদ্দেশ্য করে বলা, তা রুমকি ভালো করেই বুঝতে পেরেছে। কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। বরং কৌশলে প্রসঙ্গ পাল্টে ফেলে;

- তা এখানে কেন এসেছিলে ? কোনো দরকারে নাকি এমনিই.?

- বেলী ফুলের মালা কিনতে এসেছিলাম। বউয়ের হুকুম প্রতিদিন অফিস থেকে ফেরার সময় তার জন্য একটা করে বেলীফুলের মালা নিয়ে যেতে হবে। বিয়ের পর থেকে এভাবেই চলছে আর কি। 

- ও আচ্ছা। কিনেছো বেলী ফুলের মালা ?

- না। যে বাচ্চা মেয়েটা মালা বিক্রি করে, আজ ওকে দেখতে পাচ্ছি না। দেখি অন্য কোথাও পাই কিনা। বাই দ্যা ওয়ে, তুমি কেন এসেছিলে ?

- মালাই চা খেতে এসেছিলাম। 

- একা একা ?

- আরে না। ভেবেছিলাম এখানে এসে ওকে কল করে বলবো অফিস থেকে ছুটি নিয়ে চলে আসতে। প্রায়ই করি এমন। কিন্তু আজ তো তোমার সাথে কথা বলতে বলতে দেরি হয়ে গেল।

- হ্যাঁ আমারও দেরি হয়ে যাচ্ছে। অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বের হলাম যেন জলদি বাড়িতে ফিরতে পারি। তা আর হল কই! আরো দেরি করলে জ্যামে পড়তে হবে নিশ্চিত৷ 

খানিকক্ষণের মধ্যে একে অপরের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যে যার পথে হাঁটা শুরু করলো। 

বাড়িতে ফিরে ফ্রেশ না হয়েই সৌরভ দুটো বেলী ফুলের মালা তার বউয়ের দিকে এগিয়ে দিতেই চোখমুখ কুঁচকে বউ তার দিকে তাকালো,

- তোমাকে না কতদিন বলেছি এসব ঢং আমার ভালো লাগে না 😏 তাও মানতাম যদি এই সস্তা মালার বদলে দামী কিছু আনতে।

সৌরভ কোনো প্রতিউত্তর না দিয়ে শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। তারপর ফ্রেশ হতে চলে যায়। ওয়াশরুম থেকে সে তার বউয়ের গলা শুনতে পায়। গলা উঁচিয়ে বউ তাকে উদ্দেশ্য করে বলছে,

- অনলাইনে একটা কমদামী শাড়ি অর্ডার করেছি। ৪০০০টাকা কাল অফিসে যাওয়ার আগে রেখে যেও। আমি  মায়ের বাড়ি যাচ্ছি। রাতে ওখানেই থাকবো। আর শোনো রান্না করার সময় একটু সাবধানে কাজ করো৷ গতবার রান্নাঘরের বারোটা বাজিয়ে রেখেছিলে। সেগুলো পরিষ্কার করানোর জন্য  কাজের মাসিকে বাড়তি ৫০০টাকা দিতে হয়েছে। মেকআপ কেনার বাজেটে টান পড়েছিলো পরে।

সৌরভ বেসিনের আয়নার দিকে তাকিয়ে অন্যান্য দিনের মত আজও রুমকির সাথে মনে মনে কথা বলা শুরু করে দেয়;

- তুমি আমাকে আজও বুঝতে পারলে না রুমকি! চোখের মিথ্যে অভিনয় ধরতে পারলে না! মোড়ে আমি কখনো বেলী ফুলের মালা কিনতে যাই না, যাই তোমার স্মৃতিচারণ করতে।  

ড্রেসিংটেবিলের আয়নার সামনে বসে একমনে আয়নায় নিজেকে দেখছে রুমকি। পিঠ সমান চুলগুলো সামনে এনে কাঁধের একপাশে ছড়িয়ে রেখে ভাবছে,

- নতুন নতুন হেয়ার কাট দেয়ার মতো মানসিক বা আর্থিক সুখ কোনোটাই যে নেই এখন আমার। অথচ তুমি বুঝতে পারলেই না আমি আসলে ঠিক কতখানি সুখী। সে আমার লম্বা চুল পছন্দ করে ঠিকই কিন্তু ভালোবেসে নয়, বরং প্রতিরাতে মাতাল হয়ে এসে যেন আমার চুলের মুঠিটা আয়েশ করে ধরতে পারে সেজন্য। মোড়ে গিয়ে আমি কখনোই ওকে কল করে অফিস থেকে চলে আসতে বলি না একসাথে মালাই চা খাওয়ার জন্য। বরং মনে মনে প্রার্থনা করি, সে যেন ঘুণাক্ষরেও টের না পায় যে আমি আমার প্রাক্তনের স্মৃতিচারণ করতে এখানে আসি। বরাবরের মতো আজও আমাকে অন্ধের মত বিশ্বাস করে গেলে সৌরভ ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ